May 24, 2025

স্মার্ট সংবাদ

স্মার্ট সংবাদ

বাস থামিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে অপহরণ : মুক্তিপণ দাবি : ৩৩ ঘন্টা পর উদ্ধার

স্মার্ট সংবাদ ডেক্স :

ঢাকার রমনা থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী রাইসুল ইসলাম সেলিমকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অপহরণের ৩৩ ঘন্টা পর উদ্ধার করেছে পুলিশ।

কাজী রাইসুল ইসলাম সেলিম বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী সদর উপজেলার মৌকরণ ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান।

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করেছে। এ সময় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঢাকা যাওয়ার পথে কেরানীগঞ্জের ইকোরিয়া নামক এলাকায় গ্রীন লাইন পরিবহনের একটি বাসের গতিরোধ করে ৭/৮ জনের একটি দল বাসে উঠে ইউপি চেয়ারম্যানকে অপহরণ করে একটি চরে নিয়ে যায়।

সেলিমকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অপহরণের একদিন পর তার পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে বলে স্বজনরা অভিযোগ করেছেন।

এ বিষয়ে ঢাকার কেরানিগঞ্জ থানায় একটি প্রাথমিক অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশ বিভিন্ন কৌশল নিয়ে অভিযান চালায়।

উদ্ধারের পর অপহৃত সেলিম জানিয়েছেন, আমাকে আল্লাহ বাচাইছে। টাকার জন্য নেয়ার পর থেকে ওরা আমাকে বাথরুমে পানিতে ভিজিয়ে রেখেছে। একদিন ও রাত আমাকে বেধরক মারধর করেছে। বাথরুমে ঢুকিয়ে মাথায় মাঙ্কি টুপি পড়িয়ে মুখমন্ডলে সব সময় পানি মেরেছে যাতে আমার শ্বাস করতে কষ্ট হয়।

তিনি আরও জানান, ঘটনারদিন রাত তখন সাড়ে তিনটা। আমি কম্বল মুড়ি দিয়েছিলাম। হঠাৎ করেই আমার কম্বল উঠিয়ে ফেলে। তখন তাকিয়ে দেখি বাসে ৭/৮ জনের একটি দল লোক দাড়িয়ে বলছে, আপনারা ভয় পাবেন না। আমরা প্রশাসনের লোক ওকে নিয়ে যাব।

তখন আমি তাদের সাথে ধস্তাধস্তি শুরু করি। যাত্রীদের বলতে থাকি ওরা প্রশাসনের কেউ না ওরা আমাকে অপহরন করে নিয়ে যাচ্ছে। আপনারা আমাকে একটু সাহায্য করুন। কিন্তু কেউই এগিয়ে আসেনি।

তিনি আরও জানান, এরপরে আমাকে নামিয়ে একটি প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে যায় একটি চরে। সাথে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে অন্তত ৩০/৪০ জন লোকছিল। পরে আমার গলায় একটি মোটা স্বর্ণের চেইন ছিল সেটা নিয়ে যাওয়া হয়।

এছাড়া মানিব্যাগসহ আমার সাথে যা ছিল সব নিয়ে গেছে। কিন্তু অন্ধকার থাকায় চর এলাকা কোথায় তা চিনতে পারিনি।

এরপর সকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে কেরানীগঞ্জের একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। অন্ধকার তাই ঠিক করতে পারিনি। আমার হাত-পা বেঁধে বেধরক মারধর করা হয়েছে।

একপর্যায়ে আমি কৌশলের আশ্রয় নেই। সন্ত্রাসীদের মধ্যে যেটা মূল তাকে বলি টাকা আনতে হলে আমার স্ত্রীকে ফোন দাও। এরপর আমার এবং পরবর্তীতে তার (অপহরনকারী) মোবাইল ফোন দিয়ে স্ত্রীকে কল করলে ওই ফোন কলের সূত্র ধরেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাড়ে ১২টার দিকে আমাকে উদ্ধার করে। এ সময় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

রাইসুল ইসলাম সেলিম আরও বলেন, আমি চিনতে পেরেছি। কারা এর সাথে জড়িত। তবে তদন্তের জন্য আপাতত নাম বলছি না। তবে এতোটুকু বলতে চাই আমার এলাকার লোকও এ ঘটনার সাথে জড়িত আছে।

কাজী রাইসুল ইসলাম সেলিমের স্ত্রী ফারহানা খানম জানান, আমি পুলিশ প্রশাসনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। তাদের পরিশ্রম কৌশল এবং দক্ষতাকে আমি স্যালুট জানাই। তারা দিন-রাত অভিযান চালিয়ে আমার স্বামীকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে উদ্ধার করেছে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা হোক এই দাবীই করছি।

সেলিমের ছোট ভাই কাজী শাহিন সমাপ্তি জানান, ধলেশ্বর ইউনিয়নের ধলেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের একটি পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি রুমে সেলিম ভাইকে আটটে রেখে নির্যাতন করা হয়। তারপর অপহরনকারীরা মুক্তিপন আদায়ের জন্য নানান কৌশলের আশ্রয় নেয়। কিন্তু কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশসহ ডিবি ডিএমপি অপহরনকারীদের অবস্থান নিশ্চিত করে ওই ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি বাথরুম থেকে হাত-পা বাধা অবস্থায় উদ্ধার করেছে।

এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করা হয়। আটকৃতদের মধ্যে একজন পটুয়াখালীর বাসিন্দা রিপন হাওলাদার। সে ওই এলাকায় রং মিস্ত্রির কাজ করে।

বাকী চারজন ঢাকার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

 

 

‍SmartSangbad Copyright © All rights reserved. | This Site Developed by Arifin Riad