বরিশালে পুলিশ সদস্যদের বিক্ষোভ

স্মার্ট সংবাদ ডেক্স :

নিরাপত্তাসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরে কর্মবিরতি রেখে আজ বুধবার বিকেলে সাদা পোশাকে বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সে বিক্ষোভ মিছিল করেছে পুলিশ সদস্যরা। এতে সাধারণ কনস্টেবল থেকে পরিদর্শক পদের পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় পুলিশ সদস্যরা নিরপত্তাহীনতার দাবী করে বলেন, বিএমপির পুলিশ কমিশনারসহ সিনিয়র পুলিশ অফিসাররা সেনাবিহনীর সহায়তায় চলে গিয়ে তাদের কাছে আসেননি। এক ঘন্টার মধ্যে পুলিশ কমিশনার না আসলে তারা কর্মস্থল ত্যাগ করার ঘোষনা করেন।

পরে পুলিশ বাহিনীকে সংস্কার করে দলীয় প্রভাবমুক্ত জনকল্যানে নিয়োজিত করা, ক্ষমতালোভী যে সকল পুলিশ সদস্যদের কারনে পুলিশ সদস্য ও ছাত্রদের মৃত্যু হয়েছে তাদের গ্রেপ্তার করা, নিহতদের ক্ষতিপূরন দেয়া, আটঘন্টার বাইরে ওভার টাইম দেওয়া, পদোন্নতি জটিলতা নিরসনসহ মোট ১১ দফা দাবী তুলে ধরেন সাংবাদিকদের কাছে।

মিছিলটি পুলিশ লাইন্সের ভেতরে প্রদক্ষিন শেষে ড্রীল গেটে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে শেষ হয়। এর আগে দুপুরে একই দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে পুলিশ সদস্যরা বলেন, একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীর সদস্য হিসেবে এবং সরকারি আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা খুবই ক্ষীণ।

তথাপিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে শুরু থেকেই পুলিশের অধিকাংশ সদস্য মৌনভাবে একাত্মতা পোষণ করে এসেছে বলে আমরা দ্ব্যর্থ কণ্ঠে বলতে চাই।

তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীসহ প্রতিটি বাহিনী একটি চেইন অব কমান্ড অনুসরণ করে চলে। চেইন অব কমান্ড অনুসরণ করেই পুলিশ বাহিনীর অধীনস্তরা তাদের দায়িত্ব পালন করছে মাত্র। আর সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই পুলিশ বাহিনী আজ ছাত্র-জনতার মুখোমুখি। এছাড়াও বরাবরই পুলিশের প্রতি কিছু সংখ্যক সাধারণ জনতার একটা ক্ষোভ কাজ করে, কিন্তু কেউ কখনো এটা ভাবে না আমরাও তাদের মতো কারো সন্তান, তাদের মতো কখনো ছাত্র ছিলাম, এখন চাকরির জন্য দায়িত্বের খাতিরে ঊর্ধ্বতনদের আদেশ মানতে আমরা বাধ্য, সেখানে আমাদের দোষটা কোথায়।

দেশবাসীর উদ্দেশ্যে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এবং ৫ আগস্ট সরকারের পদত্যাগের পর থেকে একটি শ্রেণি কর্তৃক টার্গেট করে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর অনেক সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে বিভিন্ন পুলিশ লাইনে, থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, পুলিশ বক্স এবং যানবাহনে। আহত হয়েছে শত শত পুলিশ সদস্য।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উল্লেখ করা হয়, ৫ আগস্ট সরকারের পদত্যাগের পর থেকেই আমরা দেখেছি, আমাদের অভিভাবকরা কোনো ধরনের নির্দেশনা ছাড়াই আত্মগোপনে চলে যান, যা আমাদের নিরাপত্তাহীনতায় ফেলে দিয়েছে।

যথাযথ নির্দেশনার অভাবে আমরা অনেক পুলিশ সদস্যদের হারিয়েছি। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। একটি নির্দিষ্ট শ্রেণি কর্তৃক পুলিশ সদস্যদের বাসাবাড়িতেও হামলা চালানো হচ্ছে। জীবন রক্ষার্থে অনেকে আত্মগোপনে আছেন।

এমতাবস্থায়, পুলিশ বাহিনীর প্রতিটি সদস্যদের নিরাপত্তা এবং নিম্নোক্ত দাবি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা পুলিশ বাহিনীর অধীনস্থরা কর্মবিরতি ঘোষণা করেছি।