
স্মার্ট সংবাদ ডেক্স :
ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার উৎপাদন করে ভাগ্য বদল করে এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন বরিশালের ডলি বিশ্বাস। বাড়িতে বসেই গোবর ও কেঁচো ব্যবহার করে তিনি জৈব সার তৈরি করে বাজারজাত করছেন।
তার উৎপাদিত কেঁচো সার পরিবেশবান্ধব এবং মাটির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধি করায় এ সারের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। দামে সস্তা হওয়ায় স্থানীয় কৃষকের প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে ডলি বিশ্বাসের ভার্মি কম্পোস্ট সার।
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রামানন্দের আঁক গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর পরিমল বিশ্বাসের স্ত্রী ডলি বিশ্বাস। একসময় সংসারের অভাব-অনটনে দিন কাটতো ডলি বিশ্বাসদের। বছর দুয়েক আগে কারিতাসের ধরিত্রী প্রকল্পের আর্থিক সহয়তায় ভার্মি প্রদর্শনী শেড তৈরি করে কোঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) উৎপাদন শুরু করেন ডলি বিশ্বাস। পরবর্তীতে তা বাজারজাতকরনের মাধ্যমে মাত্র দুই বছরের মধ্যেই স্বাবলম্বী হয়েছেন ডলি বিশ্বাস।
প্রথমে কারিতাসের সহয়তায় তিনটি চারি দিয়ে এ সার উৎপাদন শুরু করা হয়। বর্তমানে তিনি ১৩টি রিং দিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে খুচরা ও পাইকারি বিক্রি করছেন।
ডলি বিশ্বাস বলেন, সার উৎপাদনের জন্য কেঁচো থেকে সার তৈরির জন্য ১৫ দিনের পুরাতন গোবর লাগে। কেঁচো গোবর খাওয়ার পর যে মল ত্যাগ করে তা থেকে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করা হয়। আর এ সার বিক্রি করে আমি স্বাবলম্বী হয়েছি।
স্থানীয় কৃষক আবু মিয়া বলেন, বাজারে রাসায়নিক সারের তুলনায় জৈব সারের দাম কম। তাই আমরা জমিতে জৈব সার ব্যবহার শুরু করেছি। এতে ভালো ফলনও পাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, এ সার ব্যবহারের ফলে জমির উর্বরতা বাড়ছে, মাটির ক্ষতি হচ্ছে না।
একই এলাকার অপর কৃষক হারুন-অর রশিদ বলেন, আমার সবজি বাগান রয়েছে। আগে ব্যাপকহারে নানান রাসায়নিক সার ব্যবহার করতাম। পরবর্তীতে ডলি বিশ্বাস কেঁচো সার উৎপাদনের পর থেকেই তার সার ক্রয় করে নিয়ে ব্যবহার করছি। এতে যেমন আগের চেয়ে ফলনও বেশি হচ্ছে, তেমনি খরচও কমেছে।
কারিতার ধরিত্রী প্রকল্পের আগৈলঝাড়া উপজেলার ইনচার্জ এডওয়ার্ড অন্তু রায় জানান, ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনের পর তা বাজারজাতের মাধ্যমে যেমন গ্রামের অসহায় নারীরা আজ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তেমনি পরিবেশ বান্ধব এ সার ব্যবহার করে কৃষকরাও লাভবান হচ্ছেন।
বরিশাল কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. রেজাউল হাসান বলেন, কেঁচো কম্পোস্ট সারের রয়েছে নানান উপকারিতা। ফলন বৃদ্ধি ও গুণগত মান বাড়ায়। সব ঋতুতে সকল ফসলে এ সার ব্যবহার করা যায়। কেঁচো কম্পোস্ট সার বীজের অংকুরোদগমনে সহায়তা করে, তেমনি মাটির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
More Stories
বরিশাল মহাশ্মশানের কমিটি নিয়ে রশি টানাটানি!
আখেরাতের আদালতে সবাইকে জবাবদিহিতা করতে হবে
বরিশালে বাস চাঁপায় হেলপার নিহত