
স্মার্ট সংবাদ ডেক্স :
রাতে কৌশলে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে একটি ঘরে আটক করে এক সন্তানের জননী ডিভোর্সি মেয়েকে জোরপূর্বক বিয়ে করার জন্য চাঁপ প্রয়োগ করা হয় নববিবাহিত ব্যবসায়ী আবুল কাশেম হাওলাদারকে (৩২)।
এসময় তিনি (কাশেম) বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে জোরপূর্বক তার হাত, মুখ ও চোখ বেঁধে হাতুরি পেটা করে গুরুত্বর আহত করা হয়।
একপর্যায়ে তার (কাশেম) সাথে থাকা নগদ ৪০ হাজার টাকা, স্বর্ণের আংটি জোরপূর্বক খুলে নিয়ে আরও দুই লাখ টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে চারটি সাদা স্ট্যাম্পে ব্যবসায়ী কাশেমের স্বাক্ষর নেওয়া হয়।
হাতুরি পেটা করে অমানুষিক নির্যাতনের সময় প্রতিবেশীরা চিৎকারের শব্দ পেয়ে গোপনে থানা পুলিশকে খবর দেন। তাৎক্ষনিক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গুরুত্বর আহতাবস্থায় আবুল কাশেমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। একই সময় পুলিশ নির্যাতনের ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের হিজলা উপজেলার খুন্না গোবিন্দপুর এলাকার জনৈক হুমায়ুন কবিরের মালিকানাধীন নিচতলার ফ্লাটের ভাড়াটিয়া বাসায়।
হাতুরি পেটায় গুরুত্বর আহত হয়ে বর্তমানে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবুল কাশেম হিজলা উপজেলার বড়জালিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের খুন্না গোবিন্দপুর গ্রামের ইউনুস হাওলাদারের ছেলে। স্থানীয় খুন্না বাজারে তার একটি কসমেটিক্সের দোকান রয়েছে।
নির্যাতনের ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর আটককৃত আব্দুস সাত্তার গাজী ও তার ডিভোর্সি মেয়ে রিপা আক্তারকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আটককৃতরা একই এলাকার বাসিন্দা।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে হিজলা থানার ওসি (তদন্ত) জাহিদুল আলম বলেন, স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে গুরুত্বর আহতাবস্থায় আবুল কাশেমকে উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে তাকে প্রথমে হিজলা উপজেলা হাসপাতালে ও পরে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ওসি আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে নির্যাতনের অভিযোগে সাত্তার গাজী ও তার মেয়ে রিপা আক্তারকে তাৎক্ষনিক আটক করা হয়। পরবর্তীতে নির্যাতনের ঘটনায় আহত আবুল কাশেমের মা হাওয়ানুর বেগম বাদি হয়ে আটককৃতদের প্রধান অভিযুক্ত করে আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবুল কাশেম জানান, ঘটনার দিন গত ১৪ জুন রাত আনুমানিক এগারোটার দিকে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে সাত্তার গাজীর নেতৃত্বে রেজাউল গাজী, কবির হোসেন, মমিন খানসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনে তার পথরোধ করেন।
একপর্যায়ে তারা জোরপূর্বক হাত, মুখ ও চোখ বেঁধে রাস্তা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে চোখ খোলার পর তিনি দেখতে পান হুমায়ুন কবিরের মালিকানাধীন বিল্ডিংয়ের নিচতলার ভাড়াটিয়া সাত্তার গাজীর ডিভোর্সি মেয়ে রিপা আক্তারের বাসায় রয়েছেন।
আবুল কাশেম আরও বলেন, সাত্তার গাজী ও তার সহযোগীরা ওই বাসায় বসে তার মেয়ে রিপাকে বিয়ে করার জন্য চাঁপ প্রয়োগ করেন। এসময় তিনি (কাশেম) বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে হাতুড়ি পেটা করা হয়। একপর্যায়ে আমার সাথে থাকা চল্লিশ হাজার টাকা ও হাতে পরিহিত একটি স্বর্ণের আংটি খুলে নিয়ে যায় সাত্তার। তারপরেও দুই লাখ টাকা দাবি করেন। ওই টাকার জন্য হামলাকারীরা জোরপূর্বক চারটি সাদা স্ট্যাম্পে কাশেমের স্বাক্ষর নিয়েছেন।
More Stories
বরিশালে মাঠ প্রশাসন সামলাচ্ছেন নারী কর্মকর্তারা
উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনে ইউএনও : সন্তোষজনক না হলেই বিল বন্ধ
মাদরাসা ছাত্রদের নাজরানা ও ছবক প্রদান