
স্মার্ট সংবাদ ডেক্স :
নারীরা এখন আর পিছিয়ে নেই। সর্বক্ষেত্রেই পুরুষদের ন্যায় সমানতালে মেধা বিকাশের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় মাঠ প্রশাসনেও এগিয়ে যাচ্ছেন নারীরা। নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা, বিচক্ষনতা ও সততার মাধ্যমে মাঠ প্রশাসনের কার্যক্রমে সফলতা কুড়িয়েছেন অনেক নারী কর্মকর্তা।
এমনই দুই নারী কর্মকর্তা হলেন-বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারিহা তানজিন এবং গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিফাত আরা মৌরি। এই দুই নারী কর্মকর্তার জনসেবামূলক কর্মকান্ডে ইতোমধ্যে জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
উভয় নারী ইউএনও জানিয়েছেন, উপজেলাবাসীকে সেবা দিতে তাদের কোন আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। যতোদিন তারা দায়িত্বে থাকবেন ততোদিন শতভাগ আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বরে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন ফারিহা তানজিন। যোগদানের পর থেকেই তিনি নিজ কর্মস্থলে দক্ষতা, সাহসিকতা ও মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন।
বিরুপ পরিস্থিতিতেও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস্তবায়িত বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে তদারকি এবং জনসেবায় নিজেকে সম্পৃক্ত রেখে প্রশংসনিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন।
অপরদিকে চলতি বছরের ২০ এপ্রিল দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশদ্বারের গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেছেন রিফাত আরা মৌরি।
দায়িত্বগ্রহনের পর পরই স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেছেন আমি নিজেকে কখন নারী কর্মকর্তা হিসেবে মনে করিনা। সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু আবদুল্লাহ খান যেভাবে গৌরনদীবাসীকে সেবা দিয়ে সকলের মনজয় করে নিয়েছিলেন, আমিও সেভাবেই সেবা দিয়ে সকলের মনজয় করতে চাই।
ফলশ্রুতিতে শুরু থেকেই রিফাত আরা মৌরি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখার পাশাপাশি উপজেলা ও পৌরসভাকে ঢেলে সাজাতে গ্রামীণ জনপদে ছুটে চলেছেন। গ্রামীণ জনপদের বাস্তবায়িত প্রকল্পের কাজগুলো নিজে স্ব-চোখে পরিদর্শন করছেন।
যেকোন নাগরিকের সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য তিনি তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বেশ স্বল্প সময়ের ব্যবধানে এ নারী কর্মকর্তা সকলের কাছে আস্থা অর্জন করে নিয়েছেন।
আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারিহা তানজিন স্মার্ট সংবাদকে জানিয়েছেন, যেদিন থেকে এ উপজেলায় যোগদান করেছি, সেদিন হয়তো অনেকের মনে প্রশ্ন ছিলো একজন নারী কর্মকর্তা কতোটুকু মাঠ সামলাতে পারবেন।
তবে আমার বিশ্বাস সময়ের স্রোতে সেই ধারনা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। আমি একজন কর্মকর্তা হিসেবে নয়, সর্বদা প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হিসেবে উপজেলাবাসীকে সেবা দিয়ে আসছি।
যেখানেই সমস্যা, সেখানেই সমাধানের চেষ্টা করেছি। শত বাঁধা পেরিয়ে সর্বস্তরের মানুষকে সাথে নিয়ে আগামীর সুন্দর আগৈলঝাড়া গড়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক রিফাত আরা মৌরি স্মার্ট সংবাদকে জানিয়েছেন, দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজেকে কখনও নারী হিসেবে মনে করিনি। একজন পুরুষ কর্মকর্তা যেভাবে তার দায়িত্ব পালন করেছেন, আমি চেষ্ঠা করছি তাদের চেয়েও বেশি সেবা দিতে।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত কোনও প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হইনি। বিভিন্নক্ষেত্রে উপজেলা ও পৌরবাসীর সহযোগিতা পাচ্ছি। দায়িত্বগ্রহণের পর থেকে উপজেলা ও পৌর প্রশাসনসহ স্থানীয় জনগনকে সাথে নিয়ে গৌরনদীকে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছি।
যতোদিন এ উপজেলায় দায়িত্বে রয়েছি ততোদিন সকলের সেবায় কাজ করে যেতে চাই।
বরিশালের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, পুরুষ কর্মকর্তাদের ন্যায় নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা ব্যাপক কর্মঠ। কাজের প্রতি যত্নবান। মাঠপর্যায়ে কর্মক্ষেত্রে তারা দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন। আমরা জেলা প্রশাসন থেকে সকল ইউএনওদেরকে জনসেবায় নিজেদের সম্পৃক্ত করতে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছি।
More Stories
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সেই মারযুককে খুঁজছে পুলিশ
বরিশালে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতিকে অব্যাহতি
ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সোবহানের সমর্থনে বিএনপির নেতাকর্মীদের সভা